সীমান্তে বিএসএফ’র গুলি: ৪৮ ঘণ্টায় ৬ বাংলাদেশি নিহত

বাংলাদেশের সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফের গুলিতে গত ৪৮ ঘন্টায় অন্তত ছয়জন বাংলাদেশি নিহত হয়েছে। গতকাল নওগাঁর পোরশায় বিএসএফ’র গুলিতে তিন গরু ব্যবসায়ী ও যশোরের শার্শায় বিএসএফ’র নির্যাতনে এক যুবক নিহত হয়।

তবে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ-বিজিবি একজনের মৃত্যুর কথা স্বীকার করেছে। এর আগে গত বুধবার লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে দুই বাংলাদেশী যুবক নিহত হয়।

জানান যায়, নওগাঁর পোরশার হাঁপানিয়া সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)’র ছোড়া গুলিতে তিন বাংলাদেশি নিহত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার ভোরে উপজেলার দুয়ারপাল সীমান্ত এলাকার ২৩১/১০ (এস) মেইন পিলারের নীলমারী বিল এলাকায় ভারতের ক্যাদারীপাড়া ক্যাম্পের বিএসএফ জোয়ানরা ঘটনাটি ঘটিয়েছে বলে জানা গেছে। তবে বর্ডার গার্ড অব বাংলাদেশ (বিজিবি) একজন নিহতের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

নিহতরা হলেন, পোরশা উপজেলার বিষ্ণপুর বিজলীপাড়ার শুকরার ছেলে রজনিত কুমার (২৫), দিঘীপাড়া গ্রামের খোদাবক্সের ছেলে মফিজুল ইসলাম (৩৫) এবং কাঁটাপুকুরের মৃত জিল্লুর রহমানের ছেলে কামাল হোসেন (৩২)।

এতে গরু ব্যবসায়ী মফিজুল ইসলাম গুলিবিদ্ধ লাশ বাংলাদেশের ২০০ গজ অভ্যন্তরে পড়ে ছিল। আর গরু ব্যবসায়ী রজনিত কুমার ও কামাল হোসেন এর লাশ ভারতের ৮০০ গজ অভ্যন্তরে পড়ে ছিল।

এ বিষয়ে ১৬-বিজিবি হাঁপানিয়া ক্যাম্প কমান্ডার নায়েব সুবেদার মোখলেছুর রহমান তিনজন গুলিবিদ্ধের বিষয়টি শুনেছেন। তবে গুলিবিদ্ধের মধ্যে বাংলাদেশের মধ্যে মফিজুল ইসলাম নামে একজন মারা যাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন এবং অপর দু’জন ভারতের অভ্যন্তরে মারা গেছে কিনা খোঁজখবর নিচ্ছেন বলে জানান। তবে ১৬ বিজিবির অধিনায়ক লে. কর্নেল বলেন, আমরা একজনের মারা যাবার কথা জানতে পেরেছি। অপর ২ জনের বিষয়ে জানার চেষ্টা চলছে। তিনি এ বিষয়ে পতাকা বৈঠকের জন্য বিএসএফকে চিঠি দিবেন বলেও জানান।

যশোরের শার্শা উপজেলার অগ্রভুলট সীমান্তে বিএসএফ’র নির্যাতনে হানেফ আলী ওরফে খোকা (৩৫) নামে এক ব্যক্তি নিহত হয়েছে। সীমান্তের ওপারে ভারতের উত্তর ২৪ পরগনার বর্ণবাড়িয়া বিএসএফ ক্যাম্পের সদস্যরা বুধবার রাতে নির্যাতন করে ওই বাংলাদেশি ব্যবসায়ীর লাশ ফেলে যায়। পরে ভারতের গাইদঘাটা থানা পুলিশ লাশ উদ্ধার করে নিজেদের হেফাজতে নেন। নিহত হানেফ আলী শার্শার অগ্রভুলট গ্রামের শাহাজাহান আলীর ছেলে।

নিহতের চাচা খবরের সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, হানেফ আলী সীমান্ত অতিক্রম করে ভারতে গরু আনতে যায়। এ সময় সে বণ্যবাড়িয়া বিএসএফ’র হাতে ধরা পড়ে। বিএসএফ সদস্যরা তাকে নির্মম নির্যাতন করলে ঘটনাস্থলেই মারা যায়। পরে লাশ ফেলে রেখে বিএসএফ সদস্যরা চলে গেলে গাইদঘাটা থানা পুলিশ লাশ উদ্ধার করে নিজেদের হেফাজতে নেয়। হানেফ আলী বুধবার বিএসএফ’র হাতে নিহত হলেও খবরটি গতকাল বিকেলে তার পরিবার জানতে পরে।

অগ্রভুলট বিজিবি ক্যাম্পের ইনচার্জ নায়েব সুবেদার মোজাম্মেল হোসেন জানান, নিহতের পিতা ক্যাম্পে এসে ঘটনাটি জানানোর পর বিষয়টি নিয়ে পতাকা বৈঠকের জন্য বিএসএফকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। লাশ ফেরত আনার চেষ্টা চলছে।

আরও