বাবা-ছেলের স্বেচ্ছাশ্রমে এক কিলোমিটার রাস্তা সংস্কার
এলাকায় চলাচলের একমাত্র কাঁচা রাস্তার মাটি ধসে গিয়ে প্রায় নিশ্চিহ্ন হতে চলেছে। কোনোমতে তিন চাকার রিকশা-ভ্যান চলাচল করতে পারে। একটু বৃষ্টি হলেই পথচারীদের চলাচলে চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয়।
রাস্তাটিতে সরকারি বরাদ্দে আট বছর আগে মাটির কাজ করার পর আর কোনো কাজ হয়নি। ফলে ধীরে ধীরে এটি অস্তিত্বহীন হতে চলেছে। এমতাবস্থায় রাস্তাটি টিকিয়ে রাখতে চলাচলের উপযোগেী করার জন্য কোদাল নিয়ে নেমে যান বাবা-ছেলে। স্বেচ্ছাশ্রমে ভরাট করেন খানাখন্দ। এভাবে এলাকার রংমিস্ত্রি জাকির হোসেন তার স্কুলপড়ূয়া ছেলেকে নিয়ে রাস্তাটি কোনোমতে সংস্কার করেছেন।
বগুড়ার গাবতলী উপজেলার রামেশ্বরপুর এবং সোনারায় ইউনিয়নের সোনারায় ও জাইগুলিকে সংযোগকারী এক কিলোমিটারের এই রাস্তা দিয়ে দুই ইউনিয়নে পাঁচ গ্রামের মানুষ চলাচল করে। রাস্তাটি সংস্কারে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের কাছে বারবার ধরনা দিয়েও কাজ না হওয়ায় স্বেচ্ছাশ্রমের উদ্যোগ নেন জাকির। সঙ্গে নেন জাইগুলি উচ্চবিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ূয়া ছেলে মাহবুর হোসেনকে। গতকাল বৃহস্পতিবার ভোরে বাবা-ছেলে কোদাল নিয়ে রাস্তা সংস্কারে নেমে পড়েন। তিন ঘণ্টা কাজ করেন। এরপর ছেলে মাহবুব বাড়ি গিয়ে গোসল সেরে নাশতা খেয়ে স্কুলে যায়। বাবা জাকির হোসেন দৈনিক মজুরির ভিত্তিতে রঙের কাজ করতে কর্মের সন্ধানে চলে যান। এভাবে বাবা-ছেলে মিলে মাঝেমধ্যেই রাস্তাটি সংস্কার করেন বলে জানান জাকির হোসেন। বিশেষ করে শুক্রবার ছুটির দিনে তারা প্রায় দিনের অর্ধেক সময় ব্যয় করেন এলাকার রাস্তা সংস্কার এবং ব্রিজের পাশে ধসে যাওয়া মাটি ভরাটের কাজে।
জাকির হোসেন বলেন, একটু বৃষ্টি হলেই রাস্তায় কাদা জমে যায়। শুস্ক মৌসুমে মাটি ধসে ধুলাবালি উড়তে থাকে। রাস্তার মাঝে মাঝে খানাখন্দ সৃষ্টি হয়েছে। এটি সংস্কারে চেয়ারম্যান-মেম্বারদের কাছে একাধিকবার আবেদন-নিবেদন করেও কোনো সমাধান হয়নি। তাই বাধ্য হয়ে নিজেরাই এটি সংস্কার করছি। শুধু এটি নয়, রাস্তাটির মাথায় একটি ব্রিজ আছে, সেই ব্রিজের দুপাশ থেকে মাটি ধসে গেছে, সেখানেও আমরা বাবা-ছেলে মিলে মাটি ভরাট করেছি। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ২০১২ সালে রাস্তাটি তৈরির পর আর সংস্কার করা হয়নি।
রামেশ্বরপুর ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার ফেরদৌস হোসেন মিঠু বলেন, রাস্তাটি সংস্কার করা জরুরি হয়ে পড়েছে। এ রাস্তা দিয়ে প্রতিদিন শত শত মানুষ চলাচল করে। উপজেলা চেয়ারম্যান রফি নেওয়াজ খান রবিনের সহায়তায় শিগগিরই রাস্তাটির সংস্কার কাজ শুরু করা হবে বলে তিনি জানান।