রান্নায় সরিষার তেল ব্যবহার করেন? দেখে নিন এর স্বাস্থ্যকর সুবিধাগুলি

রন্ধনসম্পর্কীয় এবং চিকিৎসাজনিত উদ্দেশ্যে ব্যবহৃত তেলগুলির মধ্যে অন্যতম হল সরিষার তেল। এই তেলের গন্ধ এবং ফ্লেবার যেকোনও রান্নার স্বাদ বাড়াতে পরিচিত এবং খাবারটিকে পুষ্টিকর করে তোলে। সরিষার তেল ফ্যাটি অ্যাসিডগুলির সমন্বয়ে গঠিত, যেমন -মনোস্যাচুরেটেড ফ্যাটি অ্যাসিড (৫৯ গ্রাম), স্যাচুরেটেড ফ্যাটি অ্যাসিড (১১ গ্রাম) এবং পলিআনস্যাচুরেটেড ফ্যাটি অ্যাসিড (২১ গ্রাম)। সরিষার তেল সাধারণত উত্তর ভারত, থাইল্যান্ড, বাংলাদেশ এবং কিছু পশ্চিমা দেশগুলিতে রান্নার জন্য ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়। আয়ুর্বেদে, রান্নার ক্ষেত্রে সরিষা তেলের আশ্চর্যজনক সুবিধাগুলির কথা উল্লেখ রয়েছে। এটি ডিপ ফ্রাই এবং খাবার গরম করার জন্য আদর্শ। অতএব, সরিষার তেলে রান্না করার উপকারিতাগুলি কী তা একবার দেখুন।

১) হৃদরোগের ঝুঁকি হ্রাস করতে সহায়তা করে: বিশ্বব্যাপী মৃত্যুর অন্যতম প্রধান কারণ হল করোনারি হার্ট ডিজিজ (CHD)। রান্নার তেলগুলি এই হার্টের রোগের চিকিৎসা ও ঝুঁকি হ্রাস করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে, সরিষার তেল মনোস্যাচুরেটেড ফ্যাটি অ্যাসিডযুক্ত যা কোলেস্টেরলের মাত্রা উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস করতে এবং CHD-এর ঝুঁকি হ্রাস করতে সহায়তা করে।

২) ক্যান্সারের বিরুদ্ধে লড়াই করতে পারে: একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে, ওমেগা-৩ পলিআনস্যাচুরেটেড ফ্যাটি অ্যাসিডযুক্ত ডায়েটরি সরিষার তেল ডায়েটরি ফিশ অয়েল বা কর্ন অয়েলের তুলনায় প্রাণীদের কোলন ক্যান্সার হ্রাস করতে খুব কার্যকর।

৩) স্বাদ বর্ধক হিসেবে কাজ করে: সরিষার তেলে অ্যালিল আইসোথায়োসাইনেট নামক এক রাসায়নিক যৌগ পাওয়া গেছে যা, তেলের তীব্র স্বাদের জন্য দায়ী। এই কারণেই এটি প্রতিটি খাবারের স্বাদ তুলনামূলকভাবে বাড়িয়ে তোলে।

৪) মূত্রাশয় ক্যান্সারে বাধা দেয়: সরিষার তেলে অ্যালিল আইসোথায়োসাইনেট নামে একটি রাসায়নিক যৌগ রয়েছে যা, মূত্রাশয়ে ক্যান্সারের বিকাশকে বাধা দেয়। সরিষার তেলের তীব্র গন্ধই এই ক্যান্সার প্রতিরোধকের কাজ করে।

৫) শরীরের ওজন কমাতে সহায়তা করে: একটি সমীক্ষায় বলা হয়েছে যে, ডায়াসাইলগ্লিসারল সমৃদ্ধ সরিষার তেল উল্লেখযোগ্যভাবে শরীরের ওজন হ্রাস করতে সহায়তা করে। এটি শরীরের মোট কোলেস্টেরলের মাত্রা হ্রাস করতে সহায়তা করে এবং শরীরের ভাল কোলেস্টেরল HDL কোলেস্টেরলের মাত্রা বৃদ্ধি করে। পাশাপাশি, এই তেল হজমেও সাহায্য করে।

৬) প্রদাহ হ্রাস করতে সহায়তা করে: সরিষার তেল প্রদাহজনিত রোগের চিকিৎসার জন্য খুব দক্ষ। ডায়েটে প্রতিদিন সরিষার তেল থাকলে তা শরীরের সংবেদনশীল স্নায়ুগুলিকে সক্রিয় করতে সহায়তা করে। এছাড়াও, তেলে অ্যালিল আইসোথায়োসাইনেটের উপস্থিতি প্রদাহ হ্রাস করে।

সরিষার তেল নিয়ে সাধারণত যে প্রশ্নগুলি থাকে-

১) সরিষার তেলে রান্না করা কি স্বাস্থ্যকর?
হ্যাঁ, সরিষার তেলের রান্না হার্ট, হাড়, হজম এবং স্নায়ুতন্ত্রের জন্য স্বাস্থ্যকর। এতে মনোস্যাচুরেটেড এবং পলিআনস্যাচুরেটেড ফ্যাটি অ্যাসিডের উপস্থিতি রয়েছে।

২) আমরা কি সরিষার তেলে রান্না করতে পারি?
হ্যাঁ, সরিষার তেলে রান্না করা যায়। এই তেল ডিপ ফ্রাই, খাবার গরম এবং খাবারে অনন্য স্বাদ আনতে অসাধারণ কার্যকর।

৩) সরিষার তেল কী ত্বক কালো করে দেয়?
না, সরিষার তেল ত্বক কালো করে বলে কোনও প্রমাণ নেই। প্রকৃতপক্ষে, সরিষার তেল ত্বকের জন্য সেরা হিসেবে বিবেচিত হয় কারণ, এটি ত্বকের র্যাশ কমায়, পোকামাকড়কে ত্বক থেকে দূরে রাখে, ত্বক চকচকে এবং আরও সুন্দর ও আগের চেয়ে স্বাস্থ্যকর করে তোলে।

 

আরও