ইউটিউব চ্যানেল বা আইপি টিভিতে সংবাদ নিষিদ্ধ : তথ্যমন্ত্রী
প্রকাশিত হয়েছে : ১১:৫১:২৪,অপরাহ্ন ০৩ এপ্রিল ২০২৩ | সংবাদটি ৩৮ বার পঠিত
নীতিমালা অনুযায়ী আইপি টিভি বা ইউটিউব চ্যানেলে সংবাদ পরিবেশন করা না গেলেও বিষয়টি অনেক বেড়ে গেছে বলে জানিয়েছেন তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ। এ ইস্যুতে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় থেকে বিজ্ঞপ্তি জারি করা হবে বলেও জানান তিনি।
জাতীয় চলচ্চিত্র দিবস-২০২৩ উদযাপন উপলক্ষ্যে সোমবার (৩ এপ্রিল) দুপুরে রাজধানীর তেজগাঁওয়ে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন কর্পোরেশনের (বিএফডিসি) জহির রায়হান কালার ল্যাব মিলনায়তনে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি বক্তৃতায় মন্ত্রী এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘আমাদের গণমাধ্যম নীতিমালা যেটি মন্ত্রিসভায় পাস হয়েছে, সেটি অনুযায়ী কোনো আইপি টিভি বা ইউটিউব চ্যানেল সংবাদ পরিবেশন করতে পারে না। এটি মন্ত্রিসভায় বেশ আগে অনুমোদিত নীতিমালা। সেই নীতিমালা অনুযায়ী আইপি টিভি বা ইউটিউব চ্যানেল সংবাদ পরিবেশন করা নিয়ম বহির্ভূত, আমি শুধু এটি মনে করিয়ে দিলাম।’
‘এটি এতবেশি বেড়ে গেছে সেজন্য আজকে বা কালকের মধ্যে আমাদের মন্ত্রণালয় থেকে বিজ্ঞপ্তি জারি করা হবে।’
এর আগে বিএফডিসি চত্বরে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণের মাধ্যমে তথ্যমন্ত্রী দিবসটির সূচনা করেন। এর পরপরই চলচ্চিত্র অঙ্গনের শিল্পী-কুশলীদের সঙ্গে মন্ত্রী র্যালিতে অংশ নেন এবং পায়রা ও বেলুন উড়িয়ে কর্মসূচির উদ্বোধন করেন। চলচ্চিত্র তারকা রোজিনা, অঞ্জনা, পরিচালক কাজী হায়াৎ, বিএফডিসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক নুজহাত ইয়াসমিন, শিল্পী-কলাকুশলী ও কর্মকর্তারা কর্মসূচিতে যোগ দেন।
চলচ্চিত্রের কথা উল্লেখ করে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, দিনদিন আমরা উন্নতি করছি। বস্তুগত বা অবকাঠামোগত উন্নতির পাশাপাশি মানুষের আত্মিক উন্নতিও প্রয়োজন। আর আত্মিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখতে পারে চলচ্চিত্র। এমন সব সিনেমা বানানো হোক তা যেন মানুষ পরিবার-পরিজন নিয়ে দেখতে পারে এবং তা বিনোদনের পাশাপাশি দেশ, সমাজ, রাষ্ট্র গঠনে ভূমিকা রাখে, মানুষের তৃতীয় নয়ন খুলে দিতে পারে। তাহলে সেই সব সিনেমা বিনোদনের পাশাপাশি দেশ, সমাজ ও রাষ্ট্র গঠনে, রাষ্ট্রকে জাগ্রত করতে, বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের ঠিকানায় পৌঁছানোর ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখতে পারে।
দেশের চলচ্চিত্র ইতিহাসের দিকে তাকিয়ে সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, ‘১৯৫৭ সালের এই দিনে তৎকালীন তরুণ নেতা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান প্রাদেশিক পরিষদে চলচ্চিত্র উন্নয়ন কর্পোরেশন বিল উপস্থাপন করেছিলেন। তিনি অনুধাবন করেছিলেন যে, সংস্কৃতির সব শাখার সন্নিবেশে যা সৃষ্টি হয়, সেটি হলো চলচ্চিত্র। চলচ্চিত্রে গান থাকে, নৃত্য থাকে, চলচ্চিত্র সব শাখার সন্নিবেশ ঘটায়। জাতির পিতা এসব কিছু তখনই অনুধাবন করেছিলেন বলেই বিলটি উপস্থাপন করেছিলেন।’
মন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আবার আমাদের চলচ্চিত্র শিল্প ঘুরে দাঁড়িয়েছে, এজন্য অনেকগুলো পদক্ষেপ তিনি নিয়েছেন। সিনেমা হল নির্মাণ এবং পুরোনো হল সংস্কারের জন্য সহজ শর্তে ১ হাজার কোটি টাকার এক বিশেষ তহবিল গঠন করা হয়েছে। এরইমধ্যে অনেকেই দরখাস্ত করেছেন। অনেকে সিনেপ্লেক্স চালু করেছেন এবং বন্ধ হয়ে যাওয়া সিনেমা হলও চালু হয়েছে। দু’বছর করোনা মহামারির বেড়াজালে আবদ্ধ না থাকলে আরো সিনেমা হল চালু হতো।
হাছান মাহমুদ জানান, ‘চলচ্চিত্রে অনুদানের পরিমাণ ও সংখ্যা দুটিই বেড়েছে। এফডিসিতে নতুন দৃষ্টিনন্দন কমপ্লেক্স নির্মাণ কাজ চলছে, সেখানে চারটি শুটিং স্পট থাকবে এবং একজন নির্মাতা সেখান থেকে একটা সিনেমা বানিয়ে মুক্তি দিতে পারবেন। এছাড়াও চলচ্চিত্র শিল্পের জন্য নেওয়া একশ একর জায়গায় চলচ্চিত্র নির্মাণের সব সুবিধা সৃজন করা হচ্ছে।
এ সময় নির্বাচন কমিশন থেকে সদ্য পাওয়া সিদ্ধান্ত নিয়ে সাংবাদিকরা মন্ত্রীকে প্রশ্ন করেন। তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী হাছান বলেন, ‘আমরা দেশকে ডিজিটাল করতে পেরেছি। বহু নাগরিক সেবা ও সুবিধা এখন ডিজিটাল। তবে নির্বাচন কমিশন স্বাধীন। কী পদ্ধতিতে নির্বাচন হবে সেই সিদ্ধান্ত নেওয়ার এখতিয়ার নির্বাচন কমিশনের আছে। আমি এইমাত্র আপনাদের মাধ্যমে জানতে পারলাম তারা ঘোষণা করেছে যে, ৩০০ আসনেই প্রচলিত পদ্ধতিতে নির্বাচন হবে। এ নিয়ে আমাদের দল দলীয়ভাবে আলাপ আলোচনা করে জানাবে। তবে নির্বাচন কমিশন স্বাধীন এবং স্বাধীনভাবেই যেকোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে পারে।
মন্ত্রী আরো বলেন, ‘আরেকটি বিষয় হচ্ছে, ইভিএম কেনা আর মেরামতের জন্য নির্বাচন কমিশন থেকে যে বাজেট চাওয়া হয়েছে সেটি এক বিলিয়ন ডলারের বেশি। আজকের পরিস্থিতিতে এই এক বিলিয়ন ডলার খরচ করার যৌক্তিকতা আছে কি না সে নিয়েও অনেকে প্রশ্ন তুলেছে।’
বিএফডিসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক নুজহাত ইয়াসমিনের সভাপতিত্বে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. ফারুক আহমেদ বিশেষ অতিথি হিসেবে এবং চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির সভাপতি কাজী হায়াৎ, পরিচালক মতিন রহমান এবং প্রযোজক খোরশেদ আলম খসরু আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন।