কানাডাকে গোয়েন্দা তথ্য দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র
প্রকাশিত হয়েছে : ৫:৪০:৪০,অপরাহ্ন ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩ | সংবাদটি ১৯৬ বার পঠিত
শিখ নেতা হরদীপ সিং নিজ্জর হত্যাকাণ্ডে সিংকে হত্যার পর কানাডাকে তথ্য সরবরাহ করেছিল মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থাগুলো। সেই সূত্রের ওপর ভিত্তি করেই ভারতের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগ এনেছেন কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো। জানা গেছে, কানাডায় নিযুক্ত এক ভারতীয় কূটনীতিকের গোপন ‘বার্তা’ ইন্টারসেপ্টের মাধ্যমেই অটোয়া নিশ্চিত হয় যে এর সঙ্গে ভারত জড়িত। মার্কিন সংবাদমাধ্য নিউ ইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা গেছে।
এতে বলা হয়, যদিও আসল তথ্য সংগ্রহের কাজটি কানাডার গোয়েন্দারাই করেছে, তবে যুক্তরাষ্ট্রের দেয়া তথ্য থেকেই ভারতের জড়িত থাকার বিষয়টি নিশ্চিত হয়েছে কানাডা। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন এই হত্যাকাণ্ডের তদন্তে কানাডাকে সহায়তা করতে ভারতের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। এ ইস্যুতে ভারতের সঙ্গে কূটনৈতিক সংঘাত এড়ানোর সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছেন মার্কিন কর্মকর্তারা। কিন্তু এই হত্যাকাণ্ডের জন্য ভারতকে দায়ী করার পেছনে মার্কিন গোয়েন্দা তথ্যের বড় ভূমিকা থাকার বিষয়টি প্রকাশ্যে চলে আসায় কানাডা-ভারত কূটনৈতিক দ্বন্দ্বে এখন যুক্তরাষ্ট্রও আটকে গেছে।
এই ঘটনা এমন সময় ঘটলো যখন যুক্তরাষ্ট্র ভারতের সঙ্গে তার সম্পর্ককে গভীর করতে চায়। দেশটি যদিও হরদীপ সিং হত্যার বিষয়টি পূর্বে থেকে জানতো না। হরদীপ সিংকে গত ১৮ই জুন কানাডার ভ্যানকুভারে গুলি করে হত্যা করে দুই জন। তিনি কানাডার নাগরিক ছিলেন।
ভারতের শিখ প্রধান পাঞ্জাব অঞ্চলের স্বাধীনতার পক্ষে সক্রিয় ভূমিকা রাখছিলেন হরদীপ। ফলে প্রথম থেকেই তাকে হত্যার পেছনে ভারতের হাত রয়েছে বলে সন্দেহ করা হচ্ছিল। এর আগেও কানাডায় আরও শিখ নেতার রহস্যময় হত্যার ঘটনা ঘটেছে।
হত্যার ঘটনার আগেই হরদীপ সিংকে সতর্ক করেছিল কানাডা। তার অনেক বন্ধু জানিয়েছেন যে, হরদীপকে বারবার হত্যার বিষয়ে সতর্ক করা হয়েছে। তিনি যেনো উপাসনালয়ে না যান, সেই পরামর্শও দিয়েছে কানাডার কর্মকর্তারা। নিউ ইয়র্ক টাইমস জানিয়েছে, কানাডার কর্মকর্তারা হরদীপকে সতর্ক করার সময় জানাননি যে তাকে ভারত সরকার টার্গেট করেছে। এ নিয়ে হোয়াইট হাউসের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা হলেও সেখান থেকে কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।
মার্কিন কর্মকর্তারা হত্যার বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করতে অনিচ্ছুক। কারণ ওয়াশিংটন যদিও কানাডার মতো ঘনিষ্ঠ মিত্রকে সাহায্য করতে চায়, কিন্তু তারা একইসঙ্গে ভারতের সঙ্গেও দূরত্ব সৃষ্টি করতে চায় না। এশিয়ায় চীনের ক্রমবর্ধমান প্রভাব ঠেকাতে ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক প্রসারিত করার পরিকল্পনা রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের। হরদীপ সিং হত্যাকাণ্ডের জন্য ভারতের বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলার কারণে অটোয়া এবং নয়াদিল্লির মধ্যে একটি বড় কূটনৈতিক ফাটল তৈরি হয়েছে। দেশ দুটি একে অপরের কর্মকর্তাদের বহিষ্কার করেছে এবং ভারত কানাডিয়ানদের জন্য ভিসা স্থগিত করেছে।
নিউ ইয়র্ক টাইমস জানিয়েছে, এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে ভারত সরকারের জড়িত থাকার বিষয়টি ওয়াশিংটনের কর্মকর্তাদের হতবাক করেছে। যদিও গণতান্ত্রিক দেশগুলি প্রায়ই অন্য দেশে গুপ্তহত্যা পরিচালনা করে। কিন্তু অন্য কোনো গণতান্ত্রিক দেশের মধ্যে এ ধরণের হত্যাকাণ্ড বেশ অস্বাভাবিক। কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো এবং কানাডার কর্মকর্তারা ভারত সম্পর্কে কানাডার সংগ্রহ করা গোয়েন্দা তথ্য প্রকাশ করতে অস্বীকার করেছেন। তবে কানাডার একজন সরকারি কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান যে, সরকার একাধিক দেশ থেকে গোয়েন্দা তথ্য পেয়েছে। কানাডিয়ান ব্রডকাস্টিং কর্পোরেশন এর আগে জানিয়েছিল- কানাডা সরকার কানাডায় ভারতীয় কূটনীতিকদের বার্তা ইন্টারসেপ্ট করছে।