সুনামগঞ্জে জলাবদ্ধতায় ডুবছে দেখার হাওরের কাঁচা ধান
প্রকাশিত হয়েছে : ৩:১৯:৩৫,অপরাহ্ন ০৬ এপ্রিল ২০২৩ | সংবাদটি ৫০ বার পঠিত
জলাবদ্ধতার কারণে তলিয়ে যাচ্ছে সদর উপজেলার দেখার হাওরের শিয়ালমারা অংশের কাঁচা ধান। চোখের সামনে কাঁচা ধান তলিয়ে যাওয়ার দৃশ্য দাঁড়িয়ে দেখা ছাড়া কিছুই করতে পারছেন না কৃষকরা। বুড়িস্থল, ডোপিকোনা, ফুলদিঘিরগাঁও, হাছননগর, কালীপুর, ইসলামপুরসহ অন্তত ২০টি গ্রামের কৃষকের জমি রয়েছে এই হাওরে। জলাবদ্ধতার জন্য কৃষকরা বৃষ্টির পাশাপাশি পৌর শহরের ড্রেনের পানি এবং হাওরের ফসলরক্ষা বাঁধের কারণে পানি বের হতে না পারাকে দায়ী করেছেন। নিরুপায় চাষিরা সমস্যা সমাধানে উপজেলা কৃষি অফিস এবং নির্বাহী কর্মকর্তার দ্বারস্থ হয়েছেন।
সরেজমিন দেখার হাওরের শিয়ালমারা অংশে দেখা যায়, হাওরের অধিকাংশ জায়গাজুড়ে পানি জমে আছে। উঁচু জমির ধানও তলিয়ে যাওয়ার মতো অবস্থা। আরেকটু বৃষ্টি হলে পুরো ধান তলিয়ে যাবে। জমি থেকে পানি বের করার জন্য আইল কেটে দিয়েছেন কৃষকরা। কিন্তু হাওর থেকে পানি বের হওয়ার সুযোগ নেই। নিচু জমিতে বিলম্বে চাষাবাদকৃত ক্ষেতের অবস্থা আরও খারাপ বলে জানিয়েছেন কৃষকরা।
জানা যায়, শিয়ালমারা অংশের জলাবদ্ধতার পানি বের হয় ইসলামপুর স্লুইসগেটের মাধ্যমে। পানি অতিরিক্ত হওয়ায় এই গেট দিয়ে নামতে বিলম্ব হচ্ছে। আগে পুরো হাওরের পানি বের হতো শান্তিগঞ্জ উপজেলার উথারিয়া পাথারিয়া বাঁধে বসানো দুটি বড় রিং দিয়ে। সেটা বর্তমানে বন্ধ করে রাখা আছে। এ কারণে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। এ অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য দ্রুত শান্তিগঞ্জের উথারিয়া পাথারিয়া বাঁধ দিয়ে পানি বের হওয়ার সুযোগ করে দেওয়ার দাবি কৃষকদের।
সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার বুড়িস্থল গ্রামের কৃষক সাহাব উদ্দিন বলেন, পৌরসভার যত ড্রেন আছে, সব ড্রেনের পানি আসে এই হাওরে। ড্রেনের পানিও কিছু ক্ষতি করছে।
মোল্লাপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য শাখাওয়াত হাসান রাজীব বলেন, জলাবদ্ধতায় হাওরের অবস্থা খারাপ। শান্তিগঞ্জের উথারিয়া পাথারিয়া বাঁধের পানি যাওয়ার স্থান বন্ধ করে দেওয়ায় পানি নামতে না পেরে এই অবস্থা তৈরি হয়েছে। এই বাঁধ দিয়ে পানি নামার ব্যবস্থা করে দেওয়ার জন্য ইউএনও অফিসেও গিয়েছি। এখন যা করার তাদেরই করতে হবে।
সুনামগঞ্জ সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. রাকিবুল আলম বললেন, এই হাওরের পানি ইসলামপুর স্লুইসগেটের মাধ্যমে নামে। স্লুইসগেট খোলা আছে, পানিও নামছে। তবে বৃষ্টি বেশি হওয়ায় পানি নামতে দেরি হচ্ছে। দুই দিন বৃষ্টি না হলেই পানি কমে যাবে। উথারিয়া পাথারিয়া বাঁধ নিয়ে আমরা শান্তিগঞ্জের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। বাঁধটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হওয়ায় এই বাঁধ কোনোভাবেই কাটা সম্ভব নয় বলে জানিয়েছেন তারা।
সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সালমা পারভীন বলেন, বিষয়টি অবগত আছি। এটি নিয়ে কাজ চলছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড, কৃষি অফিস সবার সঙ্গে আলোচনা করে সমাধানের চেষ্টা চলছে। বিষয়টি জেলা প্রশাসককেও জানাব।