কাবাগৃহে মেহরাব নেই কেন
প্রকাশিত হয়েছে : ৭:৩৩:৩১,অপরাহ্ন ৩০ জানুয়ারি ২০২৪ | সংবাদটি ২০০ বার পঠিত
মসজিদে ইমামের দাঁড়ানোর স্থান নির্ধারণ করতে মসজিদের সামনের দেয়ালের মাঝামাঝি একটি নির্দিষ্ট স্থান তৈরি করা হয়। পরিভাষায় যাকে মেহরাব বলা হয়। পৃথিবীর বেশির ভাগ মসজিদেই মেহরাব দেওয়া হয়। মেহরাব ছাড়া যেন মসজিদের ডিজাইনই যথার্থ হয় না। কিন্তু আশ্চর্যের বিষয় হলো, পবিত্র কাবাঘরে প্রচলিত নিয়মে তৈরি কোনো মেহরাব নেই। এর কারণ কী? এর কারণ জানতে আমাদের প্রথমে জানতে হবে মেহরাব কাকে বলে বা মেহরাবকে মেহরাব বলে নামকরণের কারণ কী? মেহরাবকে মেহরাব নামকরণের ব্যাপারে কয়েকটি মতামত পাওয়া যায়। সবচেয়ে বিশুদ্ধ মত হলো এই, মেহরাবের আভিধানিক অর্থ মজলিসের অগ্রভাগ। মেহরাব যেহেতু মসজিদের অগ্রভাগেই অবস্থিত, যা কেবলার দিকে দেয়ালের মধ্যখানে ইমামের দাঁড়ানোর স্থান নির্ধারণ করার জন্য নির্মাণ করা হয়, তাই মেহরাবকে মেহরাব বলে নামকরণ হয়েছে।
হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর যুগে প্রচলিত মেহরাবের অস্তিত্ব ছিল কি না- এ ব্যাপারে ইসলামি স্কলার ও ইতিহাসবিদদের মধ্যে মতভেদ রয়েছে। কারও কারও মতে, হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর যুগে বর্তমান যুগের মতো মেহরাব ছিল না, বরং এ জাতীয় মেহরাবের প্রচলন শুরু হয় ৯১ হিজরিতে ওমর ইবনে আব্দুল আজিজ (রহ.)-এর যুগে। তিনি যখন ওয়ালিদ ইবনে আব্দুল মালেক কর্র্তৃক মদিনার গভর্নর নিযুক্ত হয়ে মসজিদে নববির পুনর্নির্মাণ করেছিলেন, তখনই মেহরাবসহ মসজিদ নির্মাণ করেন।
অবশ্য একটি দৃষ্টিকোণ থেকে বলা যায়, হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর যুগেও মেহরাব ছিল। যেহেতু শরিয়তের বিধান হলো, ইমাম কাতারের মাঝখানেই মুক্তাদিদের থেকে সামনে দাঁড়াবে, হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) ও সাহাবারা তা-ই করেছেন। এ কারণে কোনো ইসলামি আইনবিদ এই মেহরাবকে বিদআত বলেননি এবং মসজিদের অংশে দাঁড়িয়ে মেহরাবে সেজদাসহ নামাজ পড়তে কেউ নিষেধ করেননি। আর কাবাঘরের ভেতরে যেহেতু ফরজ নামাজ জামাতের সঙ্গে পড়া হয় না, তাই তাতে এমন স্থাপনা তৈরিরও প্রয়োজন পড়ে না। এ কারণেই কাবাঘরে কোনো মেহরাব নেই।