আত্মীয়-স্বজনদের দেখতে যাওয়ার প্রতিদান
প্রকাশিত হয়েছে : ২:৩২:২৪,অপরাহ্ন ১২ এপ্রিল ২০২৪ | সংবাদটি ৭০ বার পঠিত
মুমিনের জন্য ঘরকুনো কিংবা আত্মকেন্দ্রিক জীবনযাপনের সুযোগ নেই। কারণ মুমিনকে দিনে পাঁচ ওয়াক্ত জামাতে নামাজের জন্য মসজিদে উপস্থিত হতে হয়। অন্যকে দ্বিনের দাওয়াত দেওয়ার জন্য তার সঙ্গে দেখা করতে হয়। আত্মীয়দের হক আদায়ের জন্য তাদের দেখতে যেতে হয়।
ব্যস্ততার জন্য বছরের অন্য সময় এই কাজ কঠিন হলেও ঈদের সময় সবাই চেষ্টা করে, তাদের আত্মীয়-স্বজন কিংবা প্রিয় বন্ধুদের দেখতে যেতে। মহান আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য আত্মীয়দের দেখতে গেলে রিজিকে বরকত আসে। আয়ু বৃদ্ধি পায়। আনাস ইবনে মালিক (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি চায় যে তার রিজিক প্রশস্ত হোক এবং আয়ু বর্ধিত হোক, যে যেন তার আত্মীয়তার বন্ধন অক্ষুণ্ন রাখে।
(বুখারি, হাদিস : ৫৯৮৬)
এর বিপরীতে কেউ যদি আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্ন করে। কোনো শরয়ী ওজর ছাড়া তাদের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে, তাহলে এর শাস্তি ভয়াবহ। হাদিস শরিফে ইরশাদ হয়েছে, জুবায়ের ইবনে মুতইম (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, আত্মীয়তার সম্পর্ক বিছিন্নকারী জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে না। (মুসলিম : ৬৪১৫)
শুধু আত্মীয়ই নয়, আল্লাহকে খুশি করার আশায় কোনো দ্বিনি ভাইয়ের সঙ্গে সাক্ষাতের বিশেষ ফজিলত রয়েছে।
আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী (সা.) বলেছেন, এক ব্যক্তি তার ভাইয়ের সাক্ষাতের জন্য অন্য এক গ্রামে গেল। আল্লাহ তাআলা তার জন্য পথিমধ্যে একজন ফেরেশতা নিযুক্ত করলেন। সে ব্যক্তি যখন ফেরেশতার কাছে পৌঁছল, তখন ফেরেশতা জিজ্ঞেস করলেন, তুমি কোথায় যাওয়ার ইচ্ছা পোষণ করেছো? সে বলল, আমি এ গ্রামে আমার এক ভাইয়ের সঙ্গে দেখা করার জন্য যেতে চাই। ফেরেশতা বলেন, তার কাছে কি তোমার কোনো অবদান আছে, যা তুমি আরো প্রবৃদ্ধি করতে চাও? সে বলল, না। আমি তো শুধু আল্লাহর জন্যই তাকে ভালোবাসি।
ফেরেশতা বলেন, আমি আল্লাহর পক্ষ থেকে (তাঁর দূত হয়ে) তোমার কাছে অবহিত করার জন্য এসেছি যে আল্লাহ তোমাকে ভালোবাসেন, যেমন তুমি তোমার ভাইকে তাঁরই সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য ভালোবেসেছ। (মুসলিম, হাদিস : ৬৪৪৩)
এমনিভাবে আল্লাহর সন্তুষ্টির আশায় কোনো অসুস্থ ব্যক্তিকে দেখতে গেলেও কল্যাণের অধিকারী হওয়া যায়। রাসুল (সা.) ইরশাদ করেছেন, যে লোক আল্লাহ তাআলার সন্তুষ্টি হাসিলের আশায় কোনো অসুস্থ লোককে দেখতে যায় অথবা নিজের ভাইয়ের সঙ্গে দেখা-সাক্ষাৎ করতে যায়, একজন ঘোষক (ফেরেশতা) তাকে ডেকে বলতে থাকেন, কল্যাণময় তোমার জীবন, কল্যাণময় তোমার এই পথ চলাও। তুমি তো জান্নাতের মধ্যে একটি বাসস্থান নির্দিষ্ট করে নিলে। (তিরমিজি, হাদিস : ২০০৮)
ওপরের আলোচনা দ্বারা বোঝা যায় যে আল্লাহর সন্তুষ্টির আশায় দেখতে গেলে কয়েকটি পুরস্কার পাওয়া যায়। ১. আয়ু বৃদ্ধি। ২. রিজিকে বরকত। ৩. আল্লাহর ভালোবাসা। ৪. ফেরেশতাদের দোয়া। ৫. জান্নাতের বাসস্থান।
মহান আল্লাহ আমাদের সবাইকে পবিত্র ঈদ উপলক্ষে এই কল্যাণ অর্জনের তাওফিক দান করুন। আমিন