কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে নারী হেনস্থাকারী যুবক ডিবি হেফাজতে
প্রকাশিত হয়েছে : ১:২৭:৫৬,অপরাহ্ন ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | সংবাদটি ১৩ বার পঠিত
কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে এক তরুণীকে কান ধরিয়ে ওঠবস-মারধর করানোর দায়ে ফারুকুল ইসলাম নামে এক যুবককে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) নিজেদের হেফাজতে নিয়েছে বলে জানা গেছে।
শুক্রবার (১৩ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাতে তাকে হেফাজতে নেওয়া হয়েছে বলে জানান কক্সবাজার জেলা পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের ওসি জাবেদ মাহমুদ। ডিবি জানিয়েছে, অভিযুক্ত ফারুকুল ইসলামের বাড়ি চট্টগ্রামের সাতকানিয়া উপজেলায়।
ডিবির ওসি জানান, সৈকতে এক নারীকে কান ধরিয়ে উঠবস এবং মারধর করায় অভিযুক্ত যুবক ফারুকুল ইসলামকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডিবি হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। তবে এখনো আটক বা গ্রেপ্তার দেখানো হয়নি।
এর আগে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের সুগন্ধা পয়েন্টে এক তরুণীকে কান ধরে উঠবস এবং মারধর করা হচ্ছে; এ রকম একটি ভিডিও শুক্রবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। ভিডিওতে দেখা যায়, রাতে সৈকতে এক তরুণীকে কান ধরিয়ে ওঠবস করানো এবং লাঠি দিয়ে পেটানো হচ্ছে এবং তা পাশে দাঁড়িয়ে দেখছেন একদল অতিউৎসাহী জনতা।
কান ধরে ওঠবস করানোর ওই ভিডিও ছাড়াও ফেসবুকে আরও দু’টি ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে। এর একটিতে দেখা যায়, সৈকতে চেয়ারে বসা এক নারীকে একদল যুবক গিয়ে চলে যেতে বলছেন। এক পর্যায়ে তাঁকে পেটানোর ভয় দেখিয়ে চলে যেতে বাধ্য করা হয়। সেখানেও লাঠি হাতে ওই যুবককে দেখা যায়।
আরেকটিতে দেখা যায়, কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতের ‘কড়াই’ রেস্তোরাঁর সামনে টুরিস্ট পুলিশ বক্সে পুলিশ সদস্যের সামনে ভীতসন্ত্রস্ত এক নারী। মোবাইল ফোন চাচ্ছেন আর উপস্থিত জনতার কাছে বারবার ক্ষমা চাচ্ছেন। তিনি (নারী) বলছেন, তার ফোনটা ফেরত দিলেই টিকিট কেটে চলে যাবেন।
এ ধরনের ভিডিও ছড়িয়ে পড়লে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিন্দা ও ক্ষোভের ঝড় ওঠে। কেউ কেউ আবার যৌনকর্মী- তৃতীয় লিঙ্গের বলে হেনস্তাকারীদের পক্ষে ও সাফাই গাইছেন।
এসব ভিডিও ফেইসবুকে ছড়িয়ে পড়লে তৎপর হয় পুলিশ। ভিডিও দেখে ফারুকুলকে শনাক্ত করার পর তাকে আটক করা হয় বলে জানান গোয়েন্দা বিভাগের ওসি জাবেদ মাহমুদ।
এদিকে ঘটনার সময় ওই যুবক নিজেকে ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের স্থানীয় সমন্বয়ক’ বলে দাবি করায় অনেকে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
তবে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে কক্সবাজারে শুরু থেকে সক্রিয় থাকা স্থানীয় ছাত্র প্রতিনিধিরা বলছেন, যুবকটি ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক নয়।
সচেতন মহলের অভিযোগ, ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের পর থেকে ছাত্র বা সমন্বয়ক পরিচয় ব্যবহার করে এখন অনেকেই বিভিন্ন জায়গায় আইন নিজের হাতে তুলে নিচ্ছে।
স্থানীয় সমন্বয়ক শাহেদুল ইসলাম শাহেদ বলেন, আটক যুবক জেলার সমন্বয়ক বা নেতৃত্ব পর্যায়ের কেউ নন। আন্দোলনে যেহেতু শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি নানা শ্রেণি-পেশা, মত ও পথের মানুষের অংশগ্রহণ ছিল; আটক যুবকেরও অংশগ্রহণ থাকতে পারে। তাই বলে তিনি সমন্বয়ক পরিচয় দেওয়ার এখতিয়ার রাখেন না।
আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী কেউ যদি স্বউদ্যোগে বা সাংগঠনিক প্রক্রিয়া ছাড়া কোনো কাজ করে থাকে সেটার দায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন নেবে না জানিয়ে তিনি বলেন, ব্যক্তির দায়ভার সংগঠন নেবে না। ব্যক্তির কর্ম-অপকর্মের জবাবদিহি ব্যক্তিকেই করতে হবে।