জেনেভা আলোচনার পর যুক্তরাষ্ট্র–ইউক্রেন শান্তি পরিকল্পনায় অগ্রগতির ইঙ্গিত
প্রকাশিত হয়েছে : ৮:৫০:৪৯,অপরাহ্ন ২৪ নভেম্বর ২০২৫ | সংবাদটি ১০ বার পঠিত
ক্তরাষ্ট্র ও ইউক্রেন জানিয়েছে, জেনেভায় হওয়া আলোচনায় দুই দেশ একটি ‘হালনাগাদ ও পরিমার্জিত শান্তি কাঠামো’ তৈরি করেছে। আগামী কয়েক দিন এই পরিকল্পনা চূড়ান্ত করার কাজ চলবে।
রোববার প্রকাশিত যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় জেনেভায় হওয়া বৈঠক ‘খুবই ফলপ্রসূ’ হয়েছে।
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও বলেন, পরিকল্পনায় ‘অসাধারণ অগ্রগতি’ হয়েছে, তবে রাশিয়ার সামনে চূড়ান্ত প্রস্তাব দেওয়ার আগে এখনো কিছু কাজ বাকি।
গত সপ্তাহে লিক হওয়া এই পরিকল্পনার খসড়া রাশিয়া সতর্কভাবে স্বাগত জানালেও ইউক্রেন ও ইউরোপের নেতারা সমালোচনা করেন, কারণ তাদের চোখে তা ক্রেমলিনের পক্ষে ঝুঁকে ছিল। তবে রাশিয়ার মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ সোমবার বলেন, জেনেভায় যুক্তরাষ্ট্র–ইউক্রেন বৈঠকের ফল নিয়ে তারা এখনো কোনো তথ্য পাননি।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেন, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের টিম ‘আমাদের বক্তব্য শুনছে’—এ রকম ইঙ্গিত মিলছে। সোমবার সুইডেনের সংসদে বক্তৃতায় তিনি বলেন, এটি ইউক্রেনের জন্য ‘গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত’।
জেলেনস্কি বলেন, ‘পুতিন যা দখল করেছেন, তার আইনগত স্বীকৃতি চান। ভূখণ্ডগত অখণ্ডতা ও সার্বভৌমত্বের নীতি ভাঙতে চান। এটিই বড় সমস্যা।’ তিনি আরও বলেন, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট শুধু ইউক্রেনের নয়, গোটা বিশ্বের কাছ থেকেই এই স্বীকৃতি পেতে চান।
তিনি জানান, আলোচনায় ইউক্রেন ‘সংবেদনশীল বিষয়গুলো’—বিশেষ করে সব ইউক্রেনীয় যুদ্ধবন্দিকে মুক্ত করার দাবি—টেবিলে রাখতে সক্ষম হয়েছে। তবে ‘বাস্তব শান্তি’ পেতে এখনো আরও কাজ বাকি।
রবিবার রাতে সাংবাদিকদের রুবিও বলেন, আলোচনার মূল লক্ষ্য ছিল যুক্তরাষ্ট্রের ২৮ দফা পরিকল্পনার যেসব বিষয়ে মতপার্থক্য আছে, সেগুলো কমিয়ে আনা—এবং তারা এতে ‘উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি’ করেছেন। তবে যেকোনো চূড়ান্ত প্রস্তাব রাশিয়ার সামনে দেওয়ার আগে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টদের অনুমোদন লাগবে।
এদিকে বৈঠকে অগ্রগতির খবর আসার কয়েক ঘণ্টা আগে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প অভিযোগ করেন, ইউক্রেনের নেতারা যুক্তরাষ্ট্রের প্রচেষ্টার জন্য ‘শূন্য কৃতজ্ঞতা’ দেখাচ্ছেন। তিনি আরও বলেন, ইউরোপ এখনো রাশিয়ার কাছ থেকে তেল কিনছে—যা ক্রেমলিনের যুদ্ধ অর্থায়নের প্রধান উৎস।
ইউরোপীয় নেতারাও বলেছেন, জেনেভার বৈঠকে কিছু অগ্রগতি হয়েছে, তবে আরও কাজ বাকি। ফিনল্যান্ডের প্রেসিডেন্ট আলেকজান্ডার স্টাব বলেন, ‘বৈঠকে এগোনো গেছে, তবে এখনো বড় কিছু প্রশ্ন অমীমাংসিত।’
তিনি স্পষ্ট করেন, ইইউ বা ন্যাটোর আওতাভুক্ত যেকোনো সিদ্ধান্ত আলাদা প্রক্রিয়ায় ঐ দেশগুলোর সদস্যরাই নেবেন।
জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইয়োহান ভাডেফুল জানান, বৈঠকটি ইউরোপের জন্য ‘গুরুত্বপূর্ণ সাফল্য’, কারণ ইইউ ও ন্যাটো–সম্পর্কিত বিতর্কগুলো পরিকল্পনা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে। তার ভাষায়, ‘ইউরোপীয় ও ইউক্রেনীয়দের মাথার ওপর দিয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া চলবে না।’
ইউরোপীয় কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট আন্তোনিও কোস্তাও জেলেনস্কির সঙ্গে কথা বলেছেন। তিনি বলেন, ‘ইউক্রেন ও ইউরোপের স্বার্থে শান্তি আলোচনায় ঐক্যবদ্ধ ইইউ অবস্থান অত্যন্ত জরুরি।’
এদিকে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স ও জার্মানির নেতৃত্বে ইউরোপীয় দেশগুলো যুদ্ধ শেষ করতে একটি বিকল্প পরিকল্পনার খসড়া করেছে। তবে বিবিসি এটি স্বাধীনভাবে যাচাই করতে পারেনি, আর রুবিওও এ ধরনের কোনো পরিকল্পনার বিষয়ে অবগত নন বলে জানান।




