সিলেটে মৃত নাহিদকে জীবিত উদ্ধার, ৪০ ঘন্টা পুলিশের রুদ্ধশ্বাস অভিযান
প্রকাশিত হয়েছে : ৬:৪২:০৩,অপরাহ্ন ০২ এপ্রিল ২০২৩ | সংবাদটি ৩৯ বার পঠিত
সিলেট জেলা পুলিশ অপরাধ দমন, আসামী গ্রেফতার এবং জেলার সার্বিক আইন শৃংখলার রক্ষায় নিরলস ভাবে কাজ করে যাচ্ছে । তাছাড়া যে কোন চাঞ্চল্যকর হত্যা মামলার রহস্য উন্মোচন ও আসামী গ্রেফতারে গুরুত্বের সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছে।
গত শুক্রবার (৩১ মার্চ) ভোর রাতে সিলেটের বিয়ানীবাজার থানাধীন ৭ নং মাথিউরা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ আমান উদ্দিন মোবাইল ফোনের মাধ্যমে জানান যে, মাথিউরা ইউনিয়নের অর্ন্তগত মাথিউরা পূর্বপার গ্রামের মোঃ আব্দুল হেকিম(৬৮) পিতা-মৃত আজিজুর রহমান এর বসতবাড়ির কেয়ারটেকার নাহিদ ইসলাম (২৮) খুন হয়েছেন। তার ঘর ভর্তি রক্ত। বিয়ানীবাজার থানার একটা টিম দ্রুত ঘটনাস্থলে চলে যায় এবং বিছানা, ঘরের মেঝে এবং বারান্দা রক্তে সয়লাব কিন্তু লাশ খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। উক্ত ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়।
প্রাথমিকভাবে এটি হত্যাকান্ড মনে হওয়ায় উক্ত হত্যাকান্ডের রহস্য উদঘাটন এবং হত্যাকান্ডে জড়িত আসামিদের গ্রেফতারের জন্য বিয়ানীবাজার থানার একটি গোয়েন্দা দল অনুসন্ধান কার্যক্রম শুরু করে। অবশেষে প্রাপ্ত গোয়েন্দা তত্ত্বের ভিত্তিতে নরসিংদী হতে খুন হওয়ার নাটক সাজানো নাহিদকে বিয়ানীবাজার থানা পুলিশের একটি চৌকস দল গতকাল শনিবার (১ এপ্রিল) অভিযান পরিচালনা করে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়।
রবিবার দুপুরে সিলেট জেলা পুলিশ সুপার জানান, প্রাথমিক অনুসন্ধান ও গ্রেপ্তারকৃত আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদ করে জানা যায়, সে প্রায় (১৪) চৌদ্দ বছর ধরে এই এলাকায় আছে কিন্তু তার প্রকৃত পরিচয় কেউ জানেনা।
অনুসন্ধানে আরও জানা যায় নাহিদের বাড়ী নীলফামারীর কিশোরগঞ্জে এবং সেখানে অপরাধে জড়িয়ে পড়ায় সে বর্তমান ঠিকানায় আত্মগোপনে আছে।
পুলিশ সুপার আরও জানান, তথ্য প্রযুক্তির সহযোগিতায় জানা যায়, সে মূলত অনলাইন জুয়ার সাথে জড়িত ছিল এবং এর মাধ্যমে বড় অঙ্কের টাকা তার ঋণ হয়ে যায়। সে কৌশলে জাতীয় পরিচয় পত্রে তার নাম পরিবর্তন করে নিজের স্থায়ী ঠিকানা গোপন রেখে বর্তমানে যে বাড়ীতে তত্ত্বাবধান হিসেবে আছে সেই ঠিকানা স্হায়ী ঠিকানা হিসেবে ব্যবহার করে আসছে। প্রকৃতপক্ষে তার নাম তাজুল ইসলাম, পিতা-হোসেন আলী, মাতা-আম্বিয়া বেগম, সাং-বড়ভিটা পূর্বপাড়া, থানা-কিশোরগঞ্জ, জেলা-নিলফামারী।
তিনি আরো বলেন, অনুসন্ধানের এক পর্যায়ে নাহিদের প্রতি সন্দেহ হলে নাহিদের ঘর তল্লাশি করে তার নিজের হাতের লেখা একটা ডায়েরি পাওয়া যায় যাতে অনেক দেনা পাওনার হিসাব লেখা। ঘটনাস্তলের আশেপাশে ভালো করে তল্লাশি করে একটা বালতি ও মগে রং গুলানোর আলামত পাওয়া যায়। তখন এগুলো রক্ত কিনা পরীক্ষার জন্য ডায়াগনস্টিক সেন্টারে পাঠালে তা মানুষের রক্ত বলে কেউ সুনির্দিষ্ট মতামত প্রদান করতে পারেনি। পরবর্তীতে তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় ও নিবিড় তদন্তে তার অবস্থান জানতে পেরে বিয়ানীবাজার থানা পুলিশ তাকে নরসিংদী থেকে গ্রেফতার করতে সমর্থ হয়।
গ্রেফতারকৃত আসামীর বিরুদ্ধে পরবর্তী আইনানুগ কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন চলছে।