আজ সাবেক অর্থমন্ত্রী মুহিতের প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী, বিভিন্ন সংগঠনের ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহণ
প্রকাশিত হয়েছে : ৪:২৬:৫৫,অপরাহ্ন ৩০ এপ্রিল ২০২৩ | সংবাদটি ৩৯ বার পঠিত
বরেণ্য অর্থনীতিবিদ, বাংলাদেশ সরকারের সাবেক অর্থমন্ত্রী, রাজনীতিবিদ, লেখক ও গবেষক, ভাষাসৈনিক ও বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল মাল আবদুল মুহিত এর প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী আজ (৩০ এপ্রিল) রবিবার।
গত বছর অর্থাৎ (২০২২ সালের) ৩০ এপ্রিল না ফেরার দেশে পাড়ি জমান বিশ্বব্যাপী খ্যাতিমান এই কৃতী সন্তান। আজ রবিবার
আবুল মাল আবদুল মুহিতের প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে সিলেট ও ঢাকায় বিভিন্ন সংগঠন ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।
দিবসটি উপলক্ষে ‘সম্মিলিত নাগরিক উদ্যোগ’ সিলেটের উদ্যোগে ৩০ এপ্রিল রবিবার সকাল ১১টায় মরহুমের কবর জিয়ারত ও পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ। এছাড়া সিলেট নগরের বিভিন্ন স্থানে শোক সম্বলিত ব্যানার ও ফেস্টুন টানানো। এছাড়া আগামী ১৪ মে কেন্দ্রীয় মুসলিম সাহিত্য সংসদের শহীদ সোলেমান হলে এক আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়েছে।
এছাড়াও সিলেটে বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের পক্ষ থেকে সকালে মরহুমের কবরে শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পন,ফাতেহা পাঠ ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছে।
সাবেক অর্থমন্ত্রীর মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে সিলেট বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থা ও সিলেট জেলা ক্রীড়া সংস্থার উদ্যোগে রবিবার (৩০ এপ্রিল) সন্ধ্যা ৭টায় সিলেট জেলা স্টেডিয়ামস্থ জেলা ক্রীড়া কমপ্লেক্সের হলরুমে এক দোয়া ও মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছে। এতে উপস্থিত থাকার জন্য সবাইকে অনুরোধ জানিয়েছেন বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল ও জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক মাহি উদ্দিন আহমদ সেলিম।
আব্দুল জব্বার জলিল কল্যাণ ট্রাস্ট: সাবেক অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিতের প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আগামী ৩০ এপ্রিল রাত সাড়ে ৮টায় ট্রাস্টের উদ্যোগে সিলেট মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রি-এর হল রুম আনন্দ টাওয়ার জেল রোডে কোরআনে খতম ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছে।
আঞ্জুমান মুফিদুল ইসলাম: মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে সংস্থার উদ্যোগে নগরের হাউজিং এস্টেটস্থ আঞ্জুমান মুফিদুল ইসলাম মাদ্রাসায় দুপুর ১২টায় দোয়া ও মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছে। দিবসটি উপলক্ষে সিলেট কেন্দ্রীয় মুসলিম সাহিত্য সংসদ ৩০ এপ্রিল রবিবার সন্ধ্যা ৭টায় এক আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করেছে। বিকেল ৩টায় সিলেট জেলা ও মহানগর যুবলীগের পক্ষ থেকে সিলেট জেলা পরিষদ মিলনায়তনে আলোচনাসভা ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছে।এতে দলীয় নেতাকর্মী সহ সবাইকে উপস্হিত থাকতে আহবান জানিয়েছেন যুবলীগ নেতৃবৃন্দ। ওইদিন বাদ আছর সিলেট সদর উপজেলা বাসীর পক্ষ থেকে সিলেট নগরীর টুকেরবাজার শাহ খুররম ডিগ্রী কলেজ মসজিদে দোয়া মাহফিল আয়োজন করা হয়েছে। এছাড়াও এ এম এ মুহিতের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে ঢাকায় মরহুমের পরিবার এ বিভিন্ন সংগঠনের উদ্যোগে নানা কর্মসুচী আয়োজন করা হয়েছে।
আবুল মাল আবদুল মুহিত ১৯৩৪ সালের ২৫শে জানুয়ারি বর্তমান সিলেট শহরের ধোপা দিঘির পাড়ে পৈতৃক বাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন। বাবা এডভোকেট আবু আহমদ আবদুল হাফিজ ছিলেন তৎকালীন সিলেট জেলা মুসলিম লীগের নেতা। মা সৈয়দা শাহার বানু চৌধুরী ছিলেন সিলেট মহিলা মুসলিম লীগের সহ-সভানেত্রী।
আবুল মাল আবদুল মুহিত ছাত্রজীবনে অত্যন্ত মেধাবী ছিলেন। তিনি ১৯৪৮ সালে স্কুল ছাত্র হিসেবে প্রগতিশীল ছাত্র রাজনীতিতে যোগ দেন এবং রাষ্ট্রভাষা আন্দোলনে জড়িত হন। ১৯৪৯ সালে সিলেট সরকারি পাইলট হাইস্কুল থেকে প্রবেশিকা পরীক্ষায় কৃতকার্য হন। ১৯৫১ সালে সিলেট এমসি কলেজ থেকে আইএ পরীক্ষায় প্রথম স্থান লাভ করেন। আবুল মাল আবদুল মুহিত বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে সলিমুল্লাহ হল ছাত্র সংসদের ভিপি নির্বাচিত হয়েছিলেন।১৯৫২ সালের মাতৃভাষা ভাষা আন্দোলনেও সক্রিয় ছিলেন। ১৯৫৪ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজি সাহিত্যে বিএ (অনার্স) পরীক্ষায় প্রথম শ্রেণিতে প্রথম এবং ১৯৫৫ সালে একই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে একই বিভাগ থেকে কৃতিত্বের সাথে এমএ পাশ করেন। বিশ্ববিদ্যালয় জীবন শেষে ১৯৫৬ সালে পাকিস্তান সিভিল সার্ভিসে যোগ দেন।
বিদেশে চাকুরীরত অবস্থায় অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়ন করেন তিনি। অতঃপর ১৯৬৩-৬৪ শিক্ষাবর্ষে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমপিএ ডিগ্রী লাভ করেন। পাকিস্তান সিভিল সার্ভিস-এ (সিএসপি) যোগ দেয়ার পর জনাব মুহিত তৎকালীন পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় সরকার, পূর্ব পাকিস্তানের প্রাদেশিক সরকার এবং পরবর্তীকালে বাংলাদেশ সরকারের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করেন। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের আগে আবুল মাল আবদুল মুহিত যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটনে পাকিস্তান দূতাবাসে কর্মরত ছিলেন।
মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে তিনি পাকিস্তান সরকারের পক্ষ ত্যাগ করেন এবং সেখানে বাংলাদেশে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে মহান মুক্তিযোদ্ধের পক্ষে আন্তর্জাতিক জনমত গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।
১৯৭২ সালে তিনি বাংলাদেশের পরিকল্পনা সচিব নিযুক্ত হন। তবে এই দায়িত্ব গ্রহণ না করে তিনি বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে পরামর্শ করে ওয়াশিংটন দূতাবাসে ইকোনোমিক মিনিস্টারের দায়িত্ব গ্রহণ করেন। ১৯৭৪ সালে তিনি এশিয়া উন্নয়ন ব্যাংকে নির্বাহী পরিচালক পদে নিযুক্ত হন। এখন পর্যন্ত তিনি একমাত্র বাংলাদেশী, যিনি এ পদে আসীন হয়েছিলেন। ১৯৭৭ সালে তিনি অর্থ ও পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের বহিঃসম্পদ বিভাগে সচিব পদে নিযুক্ত হন।
১৯৮১ সালে চাকরির ২৫ বছর পূর্তিকালে মাত্র ৪৭ বছর বয়সে তিনি স্বেচ্ছায় সরকারি চাকরি থেকে অবসর নেন।
আবুল মাল আবদুল মুহিত পাকিস্তান পরিকল্পনা কমিশনের চিফ ও উপ-সচিব থাকাকালে পূর্ব ও পশ্চিম পাকিস্তানের মধ্যে বৈষম্যের ওপর ১৯৬৬ সালে একটি প্রতিবেদন প্রণয়ন করেন। পাকিস্তান জাতীয় পরিষদে এটিই ছিল এই বিষয়ে প্রথম প্রতিবেদন। ওয়াশিংটন দূতাবাসের তিনি প্রথম কূটনীতিবিদ, যিনি স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় ১৯৭১ এর জুন মাসে পাকিস্তানের পক্ষ পরিত্যাগ করে বাংলাদেশের পক্ষে আনুগত্য প্রদর্শন করেন।
১৯৮১ সালে চাকরি থেকে স্বেচ্ছায় অবসর নিয়ে তিনি অর্থনীতি ও উন্নয়ন বিশেষজ্ঞ হিসেবে ফোর্ড ফাউন্ডেশন ও ইফাদে কাজ শুরু করেন। ১৯৮২-৮৩ সালে তিনি বাংলাদেশ সরকারের অর্থ ও পরিকল্পনা মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এরপর তিনি বিশ্বব্যাংক ও জাতিসংঘের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে বিশেষজ্ঞ হিসেবে কাজ করেন। ১৯৮৪ ও ১৯৮৫ সালে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের প্রিন্সটন বিশ্ববিদ্যালয়ের উড্রো উইলসন স্কুলের ভিজিটিং ফেলো ছিলেন।
১৯৯১ সাল থেকে তিনি সার্বক্ষণিক দেশে অবস্থান করে একজন নিরপেক্ষ পর্যবেক্ষক ও রাজনৈতিক ভাষ্যকার হিসেবে বিভিন্ন বিষয়ে ভূমিকা রাখতে শুরু করেন। বিভিন্ন সামাজিক ও পরিবেশবাদী সংগঠনে সম্পৃক্ত হয়ে দেশের সুশীল সমাজের একজন অগ্রণী ব্যক্তিত্ব হিসেবে আবির্ভূত হন। বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনে তিনি একজন পথিকৃত এবং বাপা-র প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ছিলেন।
২০০১ সালের আগস্টে তিনি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে সরাসরি যোগ দেন এবং অক্টোবরে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সিলেট ১ আসন থেকে নৌকা প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে পরাজিত হন। ২০০২ সালে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য নিযুক্ত হন। ২০০৯ সালে সিলেট ১ আসন থেকে তিনি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। পরবর্তীতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারের অর্থমন্ত্রী হিসেবে নিযুক্ত হন। অত্যন্ত দৃঢ়তা ও সফলতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক পুনর্গঠনে তিনি নতুন দিগন্তের সূচনা করেন। ২০১৪ সালে সিলেট ১ আসন থেকে টানা দ্বিতীয় বারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে আবারো অর্থমন্ত্রীর দায়িত্ব লাভ করেন।
বাংলাদেশ জাতীয় সংসদে সর্বোচ্চ ১২ বার বাজেট দেয়া সাবেক অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত ২০০৯ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ সরকারের অর্থমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। দক্ষতা ও সততার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করে ২০১৮ সালের নির্বাচনের আগে তিনি সক্রিয় রাজনীতি থেকে স্বেচ্ছায় অবসর গ্রহণ করে আর নির্বাচনে অংশ না নেয়ার ঘোষণা দেন। বাংলাদেশের রাজনীতি থেকে স্বেচ্ছায় অবসর গ্রহণের ঘোষণায়ও তিনি ব্যতিক্রম ও বিরল দৃষ্টান্ত স্হাপন করেছেন। অবসর নিয়েও মুজিববর্ষ উদযাপন জাতীয় কমিটিতে তিনি গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখেন।
একজন আবুল মাল আবদুল মুহিত অফুরন্ত জীবনীশক্তির অধিকারী এক প্রাণবন্ত মানুষ। সদা হাস্যোজ্জ্বল কর্মযোগী, ধীমান এই মানুষটির স্পষ্টতা, সরলতা ও সাহসিকতা ছিল অনবদ্য।
একজন লেখক হিসেবেও জনাব মুহিত খ্যাতিমান। প্রশাসনিক ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক গ্রন্থ ছাড়াও বিভিন্ন বিষয়ে তার ৩০টি গ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে। স্থানীয় সরকার বিষয়ে তার ‘জেলায় জেলায় সরকার’ একটি আকর গ্রন্থ। প্রসঙ্গত, বাংলাদেশের মহকুমাগুলোকে জেলায় রূপান্তর এবং গণতান্ত্রিক জেলা পরিষদ প্রতিষ্ঠার প্রথম প্রশাসনিক প্রতিবেদন বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে ১৯৭২ সালে প্রণয়ন করেছিলেন তিনি।
উল্লেখ্য, ১০ বছর অর্থমন্ত্রীর দায়িত্ব সামলে ২০১৯ সালের ৭ জানুয়ারি অর্থ মন্ত্রণালয়ে নিজের শেষ কর্মদিবসে এক বিদায়ী অনুষ্ঠানে হাসতে হাসতে তিনি বলেন, “এটি আমার খুব আনন্দের বিষয়, আমাকে বিদায়-টিদায় করতে হয় নি, আমি নিজে নিজেই বিদায়টা নিয়ে নিয়েছি। জনাব মুহিত এর সংগ্রহে ছিলো ৫০ হাজার বই। মুক্তিযুদ্ধ, অর্থনৈতিক উন্নয়ন, ইতিহাস, জনপ্রশাসন এবং রাজনীতি নিয়ে ৩৪টি বই তিনি লিখেছেন, তার লেখা গ্রন্থ হলো—স্মৃতিময় কর্মজীবন, বাংলাদেশের অর্থনৈতিক বাস্তবতা ও সম্ভাবনা, বাংলাদেশের অভ্যুদয়, বাংলাদেশ : জাতিরাষ্ট্রের উদ্ভব, মহাপুরুষদের কথা কাছে থেকে দেখা, নানা দেশ নানা জাতি, স্মৃতির মণিকোঠায়, আমার সিলেট, মুক্তিযুদ্ধের রচনাসমগ্র, বসবাসের উপযুক্ত বাংলাদেশ চাই, সংকট ও সুযোগ, আমাদের জাতীয় সংসদ ও নির্বাচন, নির্বাচন ও প্রশাসন, আমাদের বিপন্ন পরিবেশ, সোনালি দিনগুলি, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাতাশ মাস, রাজনৈতিক ঐকমত্যের সন্ধানে। ২০১৭ সালে প্রকাশিত হয় ‘স্মৃতিময় কর্মজীবন’ নামে তার ষাট বছরের বিচিত্র কর্মজীবনের স্মৃতিকথা। বইটি উৎসর্গ করেছিলেন তার সহধর্মিনী সৈয়দা সাবিয়া মুহিতকে। বাংলাদেশের স্বাধীনতার পক্ষে এবং জাতীয় পর্যায়ে গৌরবোজ্জ্বল অবদানের জন্যে ২০১৬ সালে আবুল মাল আবদুল মুহিতকে স্বাধীনতা পুরস্কারে ভূষিত করেন বাংলাদেশ সরকার। জীবনের শেষ দিনগুলোতে অনেকটা নিভৃতে পরিবারের সঙ্গেই কাটছিল জনাব মুহিতের সময়। তবে ভঙ্গুর স্বাস্থ্যের কারণে মাঝে মাঝে হাসপাতালে যেতে হচ্ছিল। ১৬ মার্চ ২০২২ বুধবার সিলেটে ‘গুণীশ্রেষ্ঠ সম্মাননা’ অনুষ্ঠানই ছিল তার শেষ কোনো অনুষ্ঠানে মঞ্চে আরোহণ। নিজের জেলার মানুষের সম্মাননায় সিক্ত হয়ে আবেগ আপ্লুত মুহিত সেদিন বলেছিলেন, “আমি একান্তভাবে সিলেটের মানুষ। আমার জন্মভূমি আমার জন্যে কৃতজ্ঞতা স্বীকার করছে এর চেয়ে বড় প্রাপ্তি তো আর কিছু হতে পারে না।”
৩০ এপ্রিল ২০২২ শুক্রবার দিবাগত রাত ১২টা ৫৬ মিনিটে রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৮৮ বছর বয়সে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন। সিলেট নগরীর রায়নগরে মুহিত পরিবারের পারিবারিক কবরস্থানে মা-বাবার কবরের পাশে তাকে চির সমাহিত করা হয়।