আনোয়ারুজ্জামানকে নিয়ে মেয়র আরিফের মন্তব্য অবান্তর ও শিষ্টাচার বহির্ভূত
প্রকাশিত হয়েছে : ১২:৪৯:১১,অপরাহ্ন ০২ মে ২০২৩ | সংবাদটি ৩৫ বার পঠিত
সুজাত মনসুর: মে দিবস উপলক্ষে আয়োজিত সমাবেশে সিলেট সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে নৌকার প্রার্থী আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীকে বাইরের লোক বলে কটাক্ষ করে আরিফুল হক চৌধুরীর বক্তব্য অত্যন্ত অবান্তর, হিংসাত্মক কুরুচিপূর্ণ।
প্রথমত: সিটি কর্পোরেশনের মেয়র তো আর প্রভু নন যে আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী নির্বাচিত হলে সিলেটের মানুষ দাস হয়ে যাবে? যদি তাই হয় তাহলে কি আমরা ধরে নেবো বর্তমান মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীও সিলেটবাসীর প্রভু আর নাগরিকরা দাস?
দ্বিতীয়ত: আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী যদি বাইরের মানুষ নন বরং আরিফুল হক চৌধুরীই বাইরের মানুষ। কেননা আরিফের মূল বাড়ি মৌলভীবাজার আর আনোয়ারুজ্জামান বাড়ি সিলেটের ওসমানীনগরে।
তৃতীয়ত: আনোয়ারুজ্জামানকে যদি প্রবাসী বলে চিহ্নিত করা হয়, তাহলে আরিফও প্রবাসী। আরিফ আমেরিকা প্রবাসী হয়েছে আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী বিলেত প্রবাসী হওয়ার অনেক আগে।
চতুর্থত: আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী যেমন সিলেট এমসি ইন্টারমেডিয়েট কলেজের ছাত্র, তেমনি আরিফুল হকও। পার্থক্য এই, আনোয়ার এইচএসসি পাশ আর আরিফ ফেল। শুনেছি আরিফ নাকি এসএসসিতে কুমিল্লা পাশ।
পঞ্চমত: আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী যখন সিলেটে এরশাদ বিরোধী আন্দোলনে রাজপথে তখন আরিফুল হক চৌধুরী এরশাদের তৎকালীন পররাষ্ট্র মন্ত্রী হুমায়ুন রশীদ চৌধুরীর সাথে আঁতাত করে আমেরিকায় পালিয়ে যান। ফিরে আসেন এরশাদের পতনের পর খালেদা জিয়ার শাসনামলে। তারপর কমিশনার নির্বাচিত হয়ে সিলেট পৌরসভাকে পাশ কাটিয়ে সাবেক অর্থমন্ত্রী সাইফুর রহমানের ক্ষমতার অপব্যবহার করে সিলেট শহরের উন্নয়নের নামে কোটি কোটি বরাদ্দ এনে আত্মসাৎ করেন। কিন্তু আওয়ামী লীগের শাসনামলে সিটি কর্পোরেশনকে পাশ কাটিয়ে, ক্ষমতার অপব্যবহার করে অবৈধভাবে বদরুদ্দীন কামরান কিংবা সিলেট আওয়ামী লীগের কোন নেতা উন্নয়নের নামে কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করার চেষ্টাও করেননি।
ষষ্ঠত: আমেরিকা থেকে ফিরে আরিফ যেমন সিলেটের স্থানীয় রাজনীতিতে যুক্ত হয়েছেন, তেমনি আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী যুক্তরাজ্যে অবস্থান করলেও সিলেটের রাজনীতিতে বিশেষ করে সিলেট-২ আসনে সক্রিয় ছিলেন। তখন কেউ কোন প্রশ্ন উত্থাপন করেনি। প্রবাসী বলে দূরে ঠেলে দেয়নি। কিন্তু যেই সিলেট সিটিতে দল থেকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে তখনই প্রবাসী কিংবা বাইরের লোক প্রসঙ্গটি সামনে নিয়ে আসা হয়েছে রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলের জন্য অসৎ উদ্দেশ্যে।
সপ্তমত: বাংলাদেশের সংবিধান অনুযায়ী প্রতিটি নাগরিকের অধিকার রয়েছে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার যদি তিনি ভোটার হন। প্রবাসী হলে কেউ প্রার্থী হতে পারবে না এমন কোন বিধান আছে কি?
অষ্টমত: আরিফুল হক চৌধুরী যার নিকট থেকে নির্বাচনে দাঁড়ানোর অনুমতি প্রার্থনার জন্য লন্ডন ছুটে এসেছিলেন সেই তারেক জিয়া কিন্তু প্রায় ১৫/১৬ বছর যাবত রাজনৈতিক আশ্রয়প্রার্থী হয়ে লন্ডনে প্রবাসী।
আরিফুল হক চৌধুরীর আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীকে নিয়ে অবান্তর প্রলাপই বলে দেয় তিনি হতাশাগ্রস্ত ও আতংকিত। মাত্র ২/৩ মাসে আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী সিলেটে যে গণজাগরণ সৃষ্টি করেছেন তাতে আরিফ ঠিকই বুঝতে পেরেছেন আগামী নির্বাচন যদি প্রার্থী হন তাহলে পরাজিত হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি। যত দিন যাবে ততই সিলেটের বেশিরভাগ মানুষ বুঝতে পারবে শেখ হাসিনার প্রতিনিধি হিসেবে আনোয়ারুজ্জামান মেয়র নির্বাচিত হলে এখনকার চেয়ে আরও অনেক বেশি উন্নয়ন হবে। কে দেশি আর কে বিদেশি তা বড় কথা নয়, আমরা চাই সিলেটের অধিকতর সার্বিক উন্নয়ন। আর তা একমাত্র আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীর পক্ষেই সম্ভব।
আরিফুল হক চৌধুরীর হতাশ ও আতংকিত হওয়ার আরেকটি কারন হলো, স্বতন্ত্র প্রার্থী হলে সিলেট বিএনপির সমর্থন সে পাবে না বরং তাকে দল থেকে বহিষ্কারসহ ফেল করানোর ব্যবস্থা তারা করবে। অন্যদিকে সিলেটে ছাত্রদল ও বিএনপির অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা বদরুজ্জামান সেলিম-এর মেয়র পদে প্রার্থীতা ঘোষণাও আরিফুল হক চৌধুরীর হতাশা, আতংক ও মাথাব্যথার আরেকটি কারণ।