লেবাননে যুদ্ধবিরতি, গাজায় রক্তক্ষয়ী সংঘাতের শেষ কবে?
প্রকাশিত হয়েছে : ৮:৫৫:১৯,অপরাহ্ন ২৭ নভেম্বর ২০২৪ | সংবাদটি ৮ বার পঠিত
মধ্যপ্রাচ্যের অশান্ত অঞ্চলগুলোতে আরও একটি যুদ্ধবিরতির চুক্তি হয়েছে। লেবাননে ইসরায়েল ও হিজবুল্লাহর দীর্ঘ ১৪ মাসের সংঘাতের অবসান ঘটিয়ে বুধবার (২৭ নভেম্বর) যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়েছে। খবর রয়টার্স। এদিকে গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের আগ্রাসন এখনো চলছে এবং এর শেষ কবে হবে তা কেউ জানে না।
লেবাননে শান্তি, গাজায় অনিশ্চয়তা লেবাননে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ায় সেখানে কিছুটা স্থিতিশীলতার আশা দেখা যাচ্ছে। বৈরুতে যুদ্ধবিরতির খবরে আনন্দ উৎসব চলছে, মানুষ মিষ্টি বিতরণ করছে। তবে সেই উদযাপনের আড়ালে রয়েছেন হতাহত ও বাস্তুচ্যুতদের করুণ আর্তনাদ। ইসরায়েলের একের পর এক বিমান হামলায় লেবাননের বহু এলাকা ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে।
অন্যদিকে, গাজায় পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ। ইসরায়েলের সেনাবাহিনী গাজার ওপর ধারাবাহিকভাবে হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলো বহুবার এই আগ্রাসন বন্ধের আহ্বান জানালেও তা উপেক্ষা করে ইসরায়েল।
মধ্যস্থতা ও কূটনৈতিক প্রচেষ্টা লেবাননে যুদ্ধবিরতি সম্ভব হয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ও ফ্রান্সের মধ্যস্থতায়। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন যুদ্ধবিরতির গুরুত্ব তুলে ধরে বলেছেন, এটি লেবাননে দীর্ঘস্থায়ী শান্তির সূচনা হতে পারে। তবে গাজায় যুদ্ধবিরতি আনতে একই প্রচেষ্টা বারবার ব্যর্থ হয়েছে।
বিশ্লেষকরা মনে করেন, লেবাননে সংঘাত বন্ধ হওয়া একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। তবে গাজার পরিস্থিতি ভিন্ন। গাজার জনগণ হামাসের নিয়ন্ত্রণে, যা ইসরায়েলের জন্য একটি কৌশলগত চ্যালেঞ্জ।
গাজায় আগ্রাসনের নেপথ্যে গত বছর হামাসের আকস্মিক হামলার প্রতিশোধ নিতে গিয়ে ইসরায়েল গাজায় ব্যাপক সামরিক অভিযান চালায়। তবে এই আগ্রাসন শুধু হামাসকে লক্ষ্যবস্তু বানায়নি বরং বেসামরিক মানুষও ভয়াবহ ক্ষতির শিকার হয়েছে। শিশুসহ হাজার হাজার মানুষের মৃত্যু এবং অসংখ্য মানুষ আহত হয়েছে, লাখ লাখ মানুষ তাদের ঘরবাড়ি হারিয়েছে।
সমাধানের পথ কতটা কঠিন? লেবাননে যুদ্ধবিরতির মধ্য দিয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের ভূমিকার কিছুটা সফলতা দেখা গেলেও, গাজার জন্য একই সমাধান এখনো অধরা। গাজা উপত্যকার সংকট শুধু ইসরায়েল-হামাস সংঘাত নয় বরং এটি ফিলিস্তিনি জনগণের অধিকার ও স্বাধীনতার প্রশ্নের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িত।
ইসরায়েল যদি গাজার ওপর তার সামরিক আগ্রাসন চালিয়ে যায় এবং ফিলিস্তিনিদের ভূমি দখল অব্যাহত রাখে, তবে শান্তি স্থাপনের আশা ক্ষীণ। একই সঙ্গে, হামাসের সঙ্গে কোনো সমঝোতায় পৌঁছানোর ব্যাপারে ইসরায়েলের অস্বীকৃতিও এই সংকটকে আরও গভীর করছে।
মধ্যপ্রাচ্যে লেবাননের যুদ্ধবিরতি একটি আশার আলো দেখিয়েছে। তবে গাজা উপত্যকায় শান্তি আনার জন্য কূটনৈতিক প্রচেষ্টা আরও জোরদার করা জরুরি। যদি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় সত্যিই এই সংঘাতের একটি স্থায়ী সমাধান চায়, তাহলে সব পক্ষের প্রতি সমানভাবে চাপ প্রয়োগ করতে হবে। অন্যথায়, মধ্যপ্রাচ্যের এই রক্তক্ষয়ী অধ্যায় শুধু আরও দীর্ঘায়িত হবে।